তারক হরি, পশ্চিম মেদিনীপুর : রবিবার ভারতীয় সময় অনুযায়ী সকাল সাড়ে ৬ টায় মহিলাদের আর্টিস্টিক জিমন্যাস্টিক্সের যোগ্যতা অর্জন পর্বে নেমেছিলেন প্রণতি।
সারা বাংলার চোখ ছিল টিভির পর্দায়। শুরুটা বেশ ভালোই ছিল। আশা জাগিয়ে ভল্টে স্কোর তুলে নিয়েছিলেন ১৩.৪৬৬। ফ্লোরের লড়াই থেকেও ১০.৬৩৩ পয়েন্ট অর্জনের পর আশা ছিল। কিন্তু পরের দুটি লড়াই জমেনি। আনইভেন বারে ৯.০৩৩ এবং ব্যালেন্স বিমে ৯.৪৩৩ পয়েন্ট ঝুলিতে ভরেন তিনি। ফলে চূড়ান্ত পর্ব থেকে ছিটকে যান। ফাইনাল রাউন্ডে উঠতে ব্যর্থ হলেন বাংলার মেয়ে প্রণতি নায়েক। যোগ্যতা অর্জন পর্বে শেষ করলেন দ্বাদশ স্থানে থেকে। মাত্র দু’মাসের প্রস্তুতিতেই অলিম্পিকে গিয়েছিলেন প্রণতি নায়েক। তারপর থেকে কোচ লক্ষ্ণন শর্মার অধীনে অনুশীলন করছিলেন। কিন্তু অলিম্পিক দোরগোড়ায় থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ অনুশীলন থেকে বিরত ছিলেন প্রণতি। পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলার তথা বাংলার এই সোনার মেয়ে করোনা অতিমারির কারণে কার্যত কোনও অনুশীলনই করতে পারেননি। নিজেকে ফিট রাখার জন্য বিভিন্ন কসরত করলেও জিমন্যাস্টিক্সে উন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ নিতে পারেনি প্রণতি। শেষ মুহূর্তে অলিম্পিকের দরজা খুলে গেলেও, ফাইনাল রাউন্ডে উঠতে পারলেন না প্রণতি নায়েক। টোকিওতে ভাল ফল করতে ব্যর্থ হলেন তিনি। হাতে প্রস্তুতির যথেষ্ট সময় না থাকাই এর আসল কারণ। তবে নিজের লড়াইয়ে কোনও খামতি রাখেননি তিনি। টোকিওতে নিজের সেরাটা উজাড় করে দিয়েছিলেন, নিজের সাধ্যমতো লড়াই করেছিলেন প্রণতি নায়েক। তবু যোগ্যতা অর্জন পর্বে শেষ করলেন দ্বাদশ স্থানে থেকেই।
আফসোস তো আছেই কিন্তু সে কষ্ট ঝেড়ে ফেলতে চাইছেন পিংলার করকাই চককৃষ্ণদাস গ্রাম। গত প্রায় আড়াই মাস ধরে প্ৰণতির নামের সাথে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে তাঁদের পিংলা ও চককৃষ্ণদাস গ্রামের নাম। সেই মেয়ে পদক না পাওয়াই কিছুটা আশাহত পিংলাবাসী। আপাতত ঘরে ফিরুক তাদের সোনার মেয়ে। আর বাড়িতে কয়েকটা দিন পরিবারের সাথে সময় কাটিয়ে যাক, সেই দিকেই মুখিয়ে প্ৰণতির বাবা ও মা।