রামকৃষ্ণ চ্যাটার্জী, বর্ধমান ব্যুরো : করোনা স্বাস্থ্য বিধি মেনে অনাড়ম্বরভাবে রবীন্দ্রজন্ম জয়ন্তীতে অংশগ্রহন করলেন আসানসোল পুর প্রশাসক ,কর্পোরেশনের অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ বোর্ডের সদস্য অভিজিৎ ঘটক।
প্রতি বছর ২৫ শে বৈশাখ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন পালিত হয় ৷ তবে এবার বেলাগাম করোনার দাপটে কবিগুরুর ১৬০ তম জন্মদিন পালন করা হলো সংক্ষিপ্ত আকারে । ২বছর আগেও শহরে,গ্রামে, গঞ্জে, পাড়ায়, মহল্লায় জাকজমক পূর্ন ভাবে রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী পালন করা হত। স্কুল, কলেজ সহ সর্বত্র মঞ্চ বেঁধে নাটক, গান, আবৃত্তি, আলোচনা সভার আয়োজন হত। রবীন্দ্র অনুরাগীরা ফুলে, মালায়, চন্দনের ফোটায় সাজিয়ে তুলত হৃদয়ের কবি-প্রানের কবি, বিশ্ব কবি বরীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে। শাঁখ বাজিয়ে, উলু ধ্বনীতে সাড়া পড়ে যেত সর্বত্র।
প্রতিবছরই রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তীতে মহাসমারহে পালিত হতো আসানসোলের বিএনআর সংলগ্ন রবীন্দ্রভবনে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন উপলক্ষে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে করপোরেশন কর্মীরা সকলেই মেতে উঠত এই দিনে। গত বছর করোনার মাঝেই সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে এই দিনটি পালন করা হলেও এবছরও কোভিডের দাপটে এক্কেবারেই স্বাস্থ্য বিধি মেনে খুবই কম সংখ্যক মানুষের উপস্থিতি রাখা হয় ৷
এদিন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তিতে মাল্যদান করলেন আসানসোল করপোরেশনের পুর প্রশাসক অমরনাথ চ্যাটার্জী, কর্পোরেশনের অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ বোর্ডের সদস্য অভিজিৎ ঘটক সহ অন্যান্যরা । আসানসোল করপোরেশনের প্রশাসক অমরনাথ চ্যাটার্জী বলেন, “কোভিড পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে আমাদের কতটা প্রয়োজন তা আমরা অনুভব করতে পারছি। রবীন্দ্রনাথ তাঁর জীবনে শুধু সাহিত্য নিয়ে থাকেন নি। তিনি সমস্ত ব্যাপারে মানুষ যেন বড় হয় সেই সমস্তের মাঝে তিনি জীবনটাকে ব্যক্ত করেছেন।” তিনি বলেন “স্বাধীনতার সময় সংগ্রাম করা ও মেলবন্ধন করা সেই জায়গায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে আমরা দেখেছি। এগুলো দেখানোর মধ্য দিয়ে আমাদের শেখার প্রয়োজন রয়েছে, আসানসোল পৌর প্রশাসন সবসময় সেগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করে। আসানসোলে যে সমস্ত মনীষীদের মূর্তি রয়েছে তাদের জীবনী যেনো মানুষের মুখে বারবার চর্চিত হয়। সেই পূন্য ছোয়ায় আমাদের যে মানব জীবন সেই মানব জীবনকে ধন্য মনে করি।”
অভিজিৎ ঘটক বলেন, “কবিগুরুর জন্মদিন ভারতীয় বাঙালিদের স্মরণীয় দিন ৷ প্রতি বছরের মতোই আমরা আসানসোল মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে তাকে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাচ্ছি। আমরা আজকের দিনে যেসব সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করে থাকি আমরা এই কোভিড পরিস্থিতির জন্য তা করতে পারছিনা। প্রত্যেকটা বাঙালির ছোট থেকে বড় পর্যন্ত প্রত্যেকটি পদক্ষেপে তাকে স্মরণ করে থাকি। তার যে সাহিত্য তার যে কবিতা তার গান প্রত্যেকটি মানুষের কাছে খুশির সময় হোক বা কষ্টের সময় হোক মানুষ তাঁকে স্মরণ করে তার গান বা তার কবিতার মাধ্যমে। আমরা বাঙালি হয়ে গর্ব করি।”
এদিন তিনি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করোনার মধ্যে বাংলাকে যেভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন সেসব রূপকল্প তুলে ধরেন । করোনা অতিমারির মধ্যেই কন্যাশ্রী, রূপশ্রী , স্বাস্থ্য সাথীর মত বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প চালু রাখার মাধ্যমে মাধ্যমে সারা বিশ্বকে নতুন পথের দিশা দেখাচ্ছেন । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে বাংলা কে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তাতে সব মনীষীদের কে তিনি সারা বিশ্বের সামনে তুলে ধরবেন এমনটাই জানিয়েছেন ৷